দেহান্তর যদি সত্যি হয় পূর্বজন্মের স্মৃতি থাকে না কেন মানুষের ? Page-176
দেহান্তর যদি সত্যি হয়, পূর্বজন্মের স্মৃতি থাকে না কেন মানুষের ?
প্রজাপতিকে বরং জিজ্ঞাসা করুন, তার আছে কিনা শুয়ােপােকা-জন্মের স্মৃতি। দেহের পরিবর্তন হলে মন থেকে মুছে যায় পূর্ব দেহজাত স্মৃতি, কেবল থাকে সংস্কার। আত্মা যখন তার স্থুল আবরণ বা দেহ (Gross body) ত্যাগ করে, তখনাে থাকে সূক্ষ্ম দেহ (Subtle body) , মন-বুদ্ধি অহঙ্কার—এর সূক্ষ্ম আবরণ। মনের ক্ষমতা অসীম নয়;আমরা পাঁচ দিন আগে কি খেয়েছি মনে করতে পারি না। মনে স্মৃতি জমা থাকলেও মনের স্মৃতি জমা রাখার ইউ-এস-বি’হার্ড ড্রাইভ হচ্ছে মস্তিষ্ক। দেহ ত্যাগের সময় হার্ডড্রাইভটি ফেলে আসতে হয়,তারপর দেওয়া হয় নতুন হার্ডড্রাইভ মেমারি নতুন দেহ (New body)। এই মেটামরফোসিসে স্বাভাবিকভাবেই আবৃত হয়ে যায় পূর্ব-দেহজাত স্মৃতি। তবুও, পৃথিবীতে বহু ঘটনা ঘটেছে ও ঘটছে, যেখানে শিশু, কিশােরেরা তাদের পূর্বজন্মের কথা নির্ভুলভাবে বলে।
ডিসকভারি' ও ন্যাশনাল জিওগ্রাফি’ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষের বহু পুনর্জন্মের প্রামাণ্য ঘটনার তথ্যচিত্র প্রদর্শন করেছে। লন্ডনের বিশ্ববিখ্যাত বই প্রকাশনা সংস্থা পেঙ্গুইন একটি বই প্রকাশ করে;‘দি কমন এক্সপিরিয়েন্স’,
বইটিতে J.M. Fipps ও F. Kohen একটি গবেষণা মূলক তথ্য উপস্থাপন করেন ঃ সারা পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মের উপাসকেরা যখন তাদের সাধনার উন্নত স্তরে উপনীত হন, তখন তাদের ধর্মসম্প্রদায়গত পটভূমি ভিন্ন হলেও তাঁদের অভিজ্ঞতা বা আধাত্মিক সত্য উপলব্ধির যে অভিন্নতা দেখা যায়, বিভিন্ন অধ্যায়ে তাঁরা সেটি বাস্তব দৃষ্টান্ত সহ তুলে ধরেছেন।
এইভাবে, শেষ অধ্যায়ে, Death and Rebirth অধ্যায়ে তারা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের ভিন্ন ভিন্ন ভাষাভাষী ও মত-বিশ্বাসের মানুষের ক্ষেত্রে পুনর্জন্মের বেশ কয়েকটি বাস্তব ঘটনা বা কেস হিস্ট্রি দিয়েছেন।
বেশ কিছু বিজ্ঞানী ও পর্যবেক্ষক এই নিয়ে সারা পৃথিবীব্যাপী বিজ্ঞানসম্মত পরীক্ষণের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে গড়ে তুলেছেন প্রামাণ্য তথ্য ভান্ডার। যেমন ভার্জিনিয়া ইউনিভার্সিটির মনােবিজ্ঞানী প্রফেসর ইয়ান স্টিভেনসন সারা পৃথিবীর ১৩০০ কেস হিস্ট্রি নিয়ে সরেজমিন তদন্ত ও গবেষণা করেছেন, বহু ঘটনার সত্যতা সম্বন্ধে নিঃসংশয় হয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে পুনর্জন্মের প্রত্যক্ষ ঘটনার সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
অতি সম্প্রতি বাংলা ভাষার সংবাদপত্র দৈনিক স্টেটসম্যান’-এ 4-07-2005-এ প্রকাশিত এমন একটি প্রত্যক্ষ বাস্তব ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে ।
Comments
Post a Comment