কিভাবে জানব পরম সত্যকে? জ্ঞান লাভের দুটি পদ্ধতি।|| Page-130
কিভাবে জানব পরম সত্যকে?
জ্ঞান লাভের দুটি পদ্ধতি।

১.আরোহ পন্থা (Inductive/Ascending Method):
পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা অনুমানের মাধ্যমে ইন্দ্রিয়নির্ভর জ্ঞান অর্জন করা। ফলে প্রামানিক কর্তৃত্বকে স্বীকার না করা।
যেমন জীবনের উদ্ভব জানার জন্য টেম্পল-১ ধূমকেতুতে ডিপ-ইমপ্যক্ট রকেট ছুঁড়েছিল আমেরিকার মহাকাশ সংস্থা নাসা। মঙ্গল গ্রহ থেকে আসা উল্কার টুকরো নিয়েও চলে বিস্তর পরীক্ষা। এইভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্তে উপনীত হবার পদ্ধতি আরােহ। এইভাবে মাইক্রোস্কোপ, টেলিস্কোপ, মানমন্দির প্রভৃতির সাহায্যে গবেষণা চালিয়ে চেতনা, জগতের রহস্য, জীবনের পরিণতি ইত্যাদি জানার প্রয়াস আরােহ পন্থা।
২. অবরােহ পন্থা (Deductive/Descending Method)
সত্য-অবগত, এমন কোন প্রামাণিক কর্তৃত্বের (Authority) নিকট থেকে জানা। পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক যখন বলেন, আলাের গতি সেকেন্ডে তিন লক্ষ কিলােমিটার, ছাত্র-ছাত্রীরা তা মেনে নেয়—নিজেরা পরিমাপ করতে যায় না। এইভাবে, যিনি জানেন, তাঁর কাছ থেকে অবগত হওয়ার পন্থা অবরােহ। অবশ্য, যার কাছ থেকে জানা হচ্ছে, তাকে প্রামাণিক কর্তৃত্ব।
যে-জ্ঞান ইন্দ্রিয়ের পরিধির বাইরে, তাকে ইন্দ্রিয় দ্বারা জানা যায় না। যেমন ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে চেতনা কি, তা আজও জানতে পারেননি বিশ্বের বিজ্ঞানীরা।
পরমেশ্বর ভগবান স্বয়ং জ্ঞানস্বরূপ, তিনি পূর্ণজ্ঞানসম্পন্ন, সর্বজ্ঞ। তিনি বিশ্বরচনা করে বদ্ধজীবের কাছে বেদ বা জ্ঞান গ্রন্থ প্রকাশ করেন এবং ব্রহ্মান্ড ও ভূমন্ডলের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সেই জ্ঞান প্রদান করেন, যা গুরু-শিষ্য পরম্পরাক্রমে প্রবাহিত হয়। শ্রবণের মাধ্যমে অর্জিত হয় বলে এই জ্ঞানকে বলা হয় শ্রুতি, যা বেদের অপর নাম।।
আজও স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে-সেমিনার হলে এই শ্রুতি বা শ্রবণের পন্থা অনুসৃত হয়ে আসছে —অডিয়েন্স বা শ্রোতৃবৃন্দ লেকচারারদের বক্তব্য শােনেন।তারা অবশ্য বর্তমানে আরােহ পন্থায় অর্জিত জড়-ইন্দ্রিয়জ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। সেজন্য এইসব প্রতিষ্ঠানে লাভ করা যায় না শাশ্বত পরম সত্যের জ্ঞান।
ভগবান কে, তিনি কেমন – এসম্বন্ধে স্বয়ং ভগবানই সবচেয়ে নির্ভরযােগ্য তথ্য দিতে পারেন আর তার থেকেই যেহেতু সমগ্র জীবজগৎ, চিজ্জগত প্রকাশিত হয়েছে, তাই তার নিকট থেকে অধিগত করা যায় সমগ্র জ্ঞান। ভগবান হতে পরম্পরা ক্রমে প্রবাহিত এই শাশ্বত পূর্ণজ্ঞান স্বয়ং ভগবান বা তার প্রতিনিধি কোন সদগুরুর নিকট থেকে লাভ করার পন্থা হচ্ছে অবরােহ পন্থা।
Subscribe For Latest Information
Comments
Post a Comment