চেতনা বিকাশের প্রত্যক্ষ উপায়। হয় শ্রীকৃষ্ণ-শরণাগতি শ্রবণম........স্মরণম... ||Page-182
চেতনা বিকাশের প্রত্যক্ষ উপায়। হয় ,
শ্রীকৃষ্ণ-শরণাগতি, শ্রবণম........স্মরণম...
জড়বাদ, বস্তুবাদ শুদ্ধ চিন্ময় চেতনাকে ক্রমশ কলুষিত সংকুচিত আচ্ছাদিত করে, তমােভাবাপন্ন করে তােলে। তামসিকতার অর্থই অন্ধকারাচ্ছন্নতা (তামস = আঁধার ), আলােকহীনতা, অজ্ঞানতা।
ভগবৎ-বিদ্বেষ, ভক্তবিদ্বেষ বাইরে কারও ক্ষতি করার চেয়ে সবচেয়ে ক্ষতি করে বিদ্বেষীর নিজের :::---- চেতনার বিবর্তন বা বিকাশের পরিবর্তে ঘটে সংকোচন, মলিনতা (devolution)।
এই বিপদ জড় অস্তিত্বের গভীরতম দুর্দশার পথে নিয়ে যায়। জীব স্বরূপতঃ জড় বস্তু নয়, তাই নিজেকে জড়বস্তুজাত বলে প্রমাণ করার অপচেষ্টা করতে গিয়ে আমন্ত্রণ জানাতে হয় প্রায় জড়ত্বের অবস্থা, ব্যাকটেরিয়া-ভাইরাসের জীবন। অন্ধং তমঃ প্রবিশন্তি,ঈশােপনিষদ।
পক্ষান্তরে, শুদ্ধ ভগবৎ-ভক্তের সঙ্গ, পরমপুরুষ ভগবানের প্রতি পূর্ণ শরণাগতি ও শ্রীকৃষ্ণকথা শ্রবণ-স্মরণ চেতনাকে শুদ্ধ নির্মল করা ও চেতনাকে পরিপূর্ণরূপে বিকশিত করার প্রত্যক্ষ উপায়। এটিই বৈদিক নির্দেশ ঃ তমসাে মা জ্যোতির্গময়।
অসুর নিধনে নিপুণ শ্রীকৃষ্ণের নিকট প্রার্থনা করলে তিনি অনুগ্রহপূর্বক অশ্রদ্ধা-অবিশ্বাসরূপ মনােগত আসুরিক-ভাবকে নিধন করবেন, হৃদয়ে উজ্জ্বল জ্ঞানদীপ প্রজ্বলিত করে ধ্বংস করবেন অজ্ঞানতা জড়বাদের আঁধার, জানিয়েছেন শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং:: নাশয়ামি আত্মভাবস্থজ্ঞানদীপেন ভাস্বতা (ভগী--১০.১১) ।
শ্রীকৃষ্ণ পূর্ণ চেতন শাশ্বতপুরুষ, সচ্চিদানন্দবিগ্রহ। সেজন্য যার অন্তরে শ্রীকৃষ্ণের আধিষ্ঠান, তাঁর অন্তর তমাে-মুক্ত, নির্মল, উজ্জ্বল, আঁধার বা তমসা-মুক্ত। এটিই জীবনের পূর্ণ বিকশিত স্বরূপ, চেতনার পূর্ণ প্রস্ফুটিত রূপ।
তখন সমাপ্ত হয় বিভিন্ন জীবশরীরে জীবসত্তার সুদীর্ঘ অভিযাত্রা। জন্ম-মৃত্যুর আবর্তন, অন্তহীন পুনর্জন্ম-চক্র হতে নিষ্ক্রান্ত হয়ে চিন্ময় জীব-সত্তা চিন্ময় জগতে ভগবৎধামে ফিরে যায়, ফিরে পায় তার শাশ্বত স্বরূপ, প্রত্যক্ষ ভগবৎ-সান্নিধ্যে দিব্যানন্দপূর্ণ জীবন।।
Comments
Post a Comment