তরলীকৃত সৌন্দর্য! এক সত্যি সুন্দরীর কাহিনী। PAGE-219
তরলীকৃত সৌন্দর্য! এক সত্যি সুন্দরীর কাহিনী।
একসময় বেশ বিত্তশালী একজন ব্যক্তি ছিল, যার চেহারা ছিল, বেশ সুশ্রী সুঠাম, কিন্তু তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তা ছিল না। সে একসময় এক অত্যন্ত সুন্দরী তরুণীকে দেখে তার প্রতি অত্যন্ত আকৃষ্ট হয়ে পড়ল। ঐ তরুণীটি কেবল অত্যন্ত সুশ্রী সুরূপাই ছিল না, সে ছিল পবিত্র।
স্বভাবের; সে নিজেকে ভগবৎ-চরণে নিবেদিত করেছিল, ফলে জড় দেহজ আবিল চেতনা হতে মুক্ত হয়ে সত্য উপলব্ধি করেছিল। ফলে তার চেতনা স্নিগ্ধ ও পবিত্র হওয়ায় তার মুখমণ্ডল ও চেহারায় এক নির্মলতার পবিত্রতার সুস্নিগ্ধ বিভাস প্রতিভাত হত।
ফলে, লােকটি তাকে দেখে তাঁর প্রতি খুবই আকৃষ্ট হল। সে তার কাছে গিয়ে সরাসরি প্রেম নিবেদন করল। কিন্তু তরুণীটি দৃঢ়ভাবে তার অসম্মতি জানাল। কিন্তু লােকটি তার দেহরূপে মুগ্ধ হয়ে এতই আসক্ত, এতই অধীর হয়ে উঠেছিল যে সে ফিরে যেতে চাইল না।
তরুণী তখন তাকে বলল, “বেশ, ঠিক আছে, আমার সৌন্দর্য আপনাকে প্রলুব্ধ করেছে। কেবল এক সপ্তাহ পরে আসুন, তারপর এই দেহ-রূপ সৌন্দর্য খুশিমত উপভােগ করবেন।” লােকটি তার কথায় সম্মত হয়ে বাড়ী গিয়ে প্রতীক্ষা করতে লাগল কখন—নির্দিষ্ট সময় আসবে।।
তরুণীটি বিলম্ব না করে কবিরাজের কাছ থেকে অনেক রেচক ওষুধ এনে খেতে শুরু করল। এর ফলে তার অনর্গল দাস্ত ও বমি শুরু হল। সযত্নে দেহের সেই মল ও বমি সে একটি বড় মাটির পাত্রে সঞ্চয় করতে লাগল। এইভাবে সাতদিন ক্রমাগত রেচক ওষুধ ব্যবহারের ফলে তার দেহ প্রায় কঙ্কালসার হয়ে গেল, চোখ কোটরে প্রবেশ করল।
সাতদিন পর। দীর্ঘ প্রতীক্ষায় অধীর থাকার পর লুব্ধ চিত্তে লােকটি তরুণীর কুটীরে এল।। সেখানে সে কঙ্কালসার চেহারার কুৎসিৎ মেয়েকে বসে থাকতে দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করল, “এখানে যে সুন্দরী তরুণীটি ছিল সে কোথায়?”
“আপনার সামনে। এর মধ্যেই ভুলে গেলেন আমাকে?” লােকটি বিস্মিত হল। রূপশােভায় অনন্যা সেই সুন্দরীর একি হতশ্রী অবস্থা ! “একি চেহারা হয়েছে তােমার!” হতভম্ভ হয়ে জিজ্ঞাসা করে লােকটি।।
“হেঁ , এখন আর আমি সুন্দরী নই। কেননা, আপনি সৌন্দর্যরসিক, তাই সৌন্দর্যের সব উপাদান আপনার জন্য সঞ্চয় করে রেখেছি আমি, আপনার চিন্তার কোনই কারণ নেই। তরল আকারে রাখা সেই সৌন্দর্যসুধা আপনি চাইলে আকণ্ঠ পানও করতে পারেন।”
সে অদুরে রাখা একটি পাত্রের দিকে আঙ্গুলি নির্দেশ করল।লােকটি গিয়ে সেই তরল মল ও বমি ভর্তি পাত্রটি দেখতে পেল। “ওঃ, কি দুর্গন্ধ!” নাকে রুমাল দিল সে। “একি! তুমি আমার সঙ্গে প্রতারণা করলে?” “না”, তরুণী উত্তর দেয়। “ঐগুলি আমার দেহে যতক্ষণ ছিল, ততক্ষণ আমি রূপবতী ছিলাম। ওগুলাে বাইরে বের করে দেওয়ায় আমি রূপ হারিয়ে এতই কুৎসিত হয়ে গেছি যেজন্য আপনি আমাকে প্রথমে চিনতেও পারেননি।
সেই তরলীকৃত সৌন্দর্য উপাদান, গলিত সৌন্দর্য, আপনার জন্য। আমি জমিয়ে রেখেছি। ঐ সৌন্দর্যরস আপনার মত সৌন্দর্যরসিকের নিশ্চয়ই প্রিয় পানীয়, সুপেয়!” আপনি তৃষ্ণার্ত, পূর্ণ তৃপ্তিতে পান করুন। তখন পুরো বিষয়টি লােকটির কাছে স্পষ্ট হল।
তরুণীর কৃপায় সে জড় সৌন্দর্যের অসারতা বুঝতে পারল। সময় প্রতি দেহের সৌন্দর্য বিলােপ করে। সৌন্দর্য প্রতিফলিত হয় জড় দেহের কিছু দুর্গন্ধময় উপাদানের সাহায্যে। লােকটি ছায়া ও বাস্তবের প্রভেদ উপলব্ধি করে তার সংযমশক্তি ফিরে পেল।
Subscribe For Latest Information
Comments
Post a Comment