যোগব্যায়াম ,সুপ্ত বজ্রাসন, সুপ্ত বজ্রাসনের প্রণালী ,সুপ্ত বজ্রাসনের উপকারিতা
সুপ্ত বজ্রাসন
সুপ্ত বজ্রাসন—বজ্রাসনের একটু প্রকার ভেদ—শায়িত অবস্থায় এই আসন অভ্যাস করতে হয়—তাই এর নাম সুপ্ত বজ্রাসন। বজ্রাসনে ভালভাবে অভ্যস্ত হলে পর সুপ্ত বজ্ৰাসন অভ্যাস করা উচিত।
সুপ্ত বজ্রাসনের প্রণালী :-
হাঁটু ভেঙে পায়ের পাতার অপর পিঠ নরম কম্বলের ওপর রেখে গােড়ালির উপর পাছা রেখে সােজা হয়ে বসতে হবে এবং উভয় হাত উভয় জানুর উপর রাখতে হবে । এই অবস্থায় গুহ্যদ্বার যাতে গােড়ালিদ্বয়ের মাঝখানে থাকে, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে । প্রথমে এইভাবে বজ্রাসনের মত বসতে হবে ।
এইবার কনুই বা হাতের উপর ভর দিয়ে চিৎ হয়ে শােও। এই অবস্থায় পৃষ্ঠদেশ যাতে ভূমি স্পর্শ করে সেদিকে দৃষ্টি রাখ। প্রথম অবস্থায় মেরুদন্ড বেঁকে থাকে, অভ্যাসের দ্বারা ক্রমান্বয়ে এই বক্রতা কমে যাওয়ায় মেরুদন্ড প্রায় সরলভাবে ভূমি স্পর্শ করে।
এখন হাত দু’টি কনুই থেকে ভেঙে পরস্পর সংলগ্ন করে ছবির মত মাথার পাশে বালিশের মত রাখতে হবে এবং চোখ বন্ধ করতে হবে । এই আসন প্রথম প্রথম ৩০ সেকেন্ড করে ৪ বার অভ্যাস করতে হয়।
৩ মিনিটের বেশী কখনও এই আসনে অবস্থান করা উচিত নয়। সুপ্ত বজ্রাসন থেকে ওঠবার সময় প্রথমে পা দুটি খুলে ছড়িয়ে দিয়ে পরে হাতের উপর ভার দিয়ে উঠে বসতে হয়।।
**এই আসন কিন্তু খাবার পর করা উচিত নয়।
সুপ্ত বজ্রাসনের উপকারিতা:-
১.এই আসন অভ্যাসের ফলে পায়ের বাত , পায়ের গোড়ালির বাত ,পায়ের গেঁটেবাত, ক্রমশ সেরে ওঠে।
এই আসন অভ্যাসের ফলে যেহেতু পায়ের উপর এবং পায়ের পাতার উল্টোদিকের উপর চাপ দিয়ে শুতে হয় তাই পায়ের পেশি শক্ত হয় ও মজবুত হয়।
২.এই আসন অনিদ্রা জনিত সমস্যা দূর করে থাকে ,কিন্তু এই আসন খাবার পর করা উচিত নয় ,ভুলকরেও ভরাপেটে অর্থাৎ খাবারের পর এই আসন করা উচিৎ নয় ,কিন্তু এই আসন হালকা খাবার খেয়ে দীর্ঘদিন অভ্যাস করলে হজম শক্তি বহুগুন বেড়ে যায়।
৩.এই আসনের ফলে পরিপাকতন্ত্র অনেকটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং হজমশক্তি ক্রমশ বাড়তে থাকে।
৪.এই আসন অভ্যাসের ফলে আমাশয় কোষ্ঠকাঠিন্য সম্পূর্ণ সেরে ওঠে এবং দীর্ঘদিন অভ্যাসের ফলে পেটের নিচের দিকে অম্বল এর জন্য যে বেদনা হয় তা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়।
৫.এই আসনটি অভ্যাস এর ফলে পাকস্থলীর কার্যক্ষমতা বেড়ে যাওয়ার জন্য খাদ্যবস্তু পরিপাক হয় এবং পেটে বায়ু জমে না এবং পেটের মধ্যে যে খুটখাট আওয়াজ হতে থাকে তা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায় এবং শরীরের গঠন সুন্দর উজ্জলতা বৃদ্ধি পায়।
৬.এই আসরে অভ্যাসের ফলে হৃৎপিণ্ড শক্তিশালী হয় এবং শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে ফলে দীর্ঘায়ু এবং সুস্থ শরীর তৈরি হয়.
৭.এই আসন অভ্যাসের ফলে পায়ের পেশী এবং মেরুদণ্ডের উপর টান পড়ে ফলে উচ্চতা বেড়ে ওঠে অর্থাৎ এই আসন অভ্যাসের ফলে ছেলেমেয়েরা লম্বা হয়ে যায়।
Comments
Post a Comment