যোগব্যায়াম ভদ্রাসন || ভদ্রাসনের প্রণালী || ভদ্রাসন এর উপকারিতা
ভদ্রাসন বা গােরক্ষাসন
গুলফৌ চ বৃষণসাধ্যাধঃ সীবন্যাঃ পার্শ্বয়ােঃ ক্ষিপেৎ।
সব্যগুলফং তথা সব্যে দক্ষগুলফং তু দক্ষিণে।।
পার্শ্বপাদৌ চ পাণিভ্যাং দৃঢ়ং বদ্ধা সুনিশ্চল।।
ভদ্রাসনং ভবেদেতৎ সৰ্ব্বব্যাধিবিনাশনম।।।
গােরক্ষাসন মিত্যাহরিদং বৈসিদ্ধযােগিনঃ।।
ভদ্রাসনের প্রণালী:-
প্রথমে একটি কম্বল বা নরম বিছানায় বসতে হবে । পায়ের পাতা দুটি জোড়া করে যুক্ত পায়ের অগ্রভাগ সামনে রাখতে হবে এবং হাত দেহের পিছনে দু’পাশের কম্বল বা বিছানায় রাখতে হবে ।
এইবার দু'হাতের উপর ভর দিয়ে দেহ অল্প উপরে তোলতে এবং যুক্ত পা দুটি আস্তে আস্তে অন্ডকোষের নীচে এনে সংযুক্ত গােড়ালি দুটি সীবনীর(মলদ্বার ও অন্ডকোষদ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত নাড়ী) দু’পাশে রাখতে হবে।
এখনকম্বল থেকে ক্রমান্বয়ে প্রথমে ডান হাত তুলে ডান হাঁটুতে চাপ দিয়ে এবং পরে বাঁ হাত তুলে বাঁ হাঁটুতে চাপ দিয়ে হাঁটু দুটি কম্বলে সংলগ্ন করে ছবির মতো ভঙ্গিতে বসতে হবে। দেহ ও মাথা সামনে একটু হেলে পড়া সত্ত্বেও মেরুদন্ড সােজা করে রেখে বসতে হবে ।
হাঁটুতে চাপ দেওয়ার সময় পায়ে যাতে ব্যথা না লাগে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে । পায়ের পেশী ও স্নায়ু গুলি সম্পূর্ণ শিথিল করে রাখতে হবে ।
এই অবস্থায় ৩০ সেকেন্ড থেকে, হাত পা ছড়িয়ে বস্তে হবে । এই আসন প্রথম সপ্তাহে ৩০ সেকেন্ড করে ৮ বার, ২য় সপ্তাহে ৩০ সেকেন্ড করে ৬ বার এবং ৩য় সপ্তাহে ৩০ সেকেন্ড করে ৪ বার অভ্যাস করতে হবে। এই আসন অভ্যাসকালে স্বাভাবিকভাবে দম নিতে ও ছাড়তে হবে ।
ভদ্রাসন এর উপকারিতা:-
এই আসন নিয়মিত অভ্যাস করলে স্বপ্নদোষের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় এবং বীর্যধারণ সহজ হয়।
এই আসনের উপকারিতা বুঝতে হলে একটু বিশদভাবে আলােচনা করা দরকার। অন্ডকোষের মধ্যে শুক্র তৈরী হয়ে শুক্রবাহী নালী দিয়ে লিঙ্গমূলে নীত হয়। অন্ডকোষ, গুহ্যদ্বার, সীবনী ও লিঙ্গ মূলের চারিপার্শ্বে বহু স্নায়ু ও শিরা আছে। এদের মধ্যে ঠিকমত রক্ত চলাচল না হলে এরা ভালভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে কামাবেগ, ও স্বপ্নদোষ ইত্যাদি দেখা দেয়।
ভদ্রাসন অভ্যাসে এদের চারিদিকে স্নায়ু ও শিরাগুলির মধ্যে প্রচুর রক্ত চলাচল হওয়ায় এরা সবল ও কর্মক্ষম হয়—ফলে বীর্যধারণ সম্ভব হয় এবং শীঘ্রপতন ও স্বপ্নদোষের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এই আসন অভ্যাসে মেয়েদের বস্তি ও হাঁটুর স্নায়ুমন্ডলী বিশেষ প্রসারিত হওয়ায় সবল হয়, ফলে তাদের সন্তান প্রসবকালে বিশেষ কষ্ট পেতে হয় না। এই আসন অভ্যাসে স্ত্রীপুরুষ নির্বিশেষে সকলের ব্রহ্মচর্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। সিদ্ধযােগীগণ ইহাকে গােরক্ষাসন বলে থাকেন—আবার কেহ কেহ ইহাকে ব্রহ্মচর্য আসনও বলে থাকেন।
Subscribe For Latest Information
Comments
Post a Comment